হাগা বাবা


- কখনও নিজের মল হাত দিয়ে চটকিয়েছেন কি?

- আমি চটকাবো ক্যান? আমার ভক্তরা চটকায়। আমি চটকাইলে তো নাম গু বাবাই হইতো।

ঝাঁঝালো গলায় উত্তরগুলো দিচ্ছিলেন আকবর বস্তানী ওরফে হাগা বাবা।

বেশ দূর থেকে গিয়েছিলাম বলেই ঝাঁঝালো কথাগুলো হজম করছিলাম। নাহলে মুয়িদ সাহেব কি জিনিস দেখিয়ে দিতাম..!! একটা রিপোর্ট করলেই পুলিশের বাড়ি যখন পাছায় পড়তো তখনই বাবাজী টের পেতো কার সাথে ঝাঁঝিয়েছে।

তিনদিন আগে খবর পাই,নওগাঁর প্রত্যন্ত এক গ্রামে একজন ক্ষমতাশীল বাবা বাস করেন। লোকে তাকে হাগা বাবা বলে ডাকে।
মাটি বাবা,পানি বাবা,জুতা বাবা,ন্যাংটো বাবা আরও কত বাবার নাম শুনেছি। এরা নিজ নিজ ক্ষেত্রে স্বকীয়। যেমন মাটি বাবা মাটি খান,ন্যাংটো বাবা কাপড় পড়েন না। এমনকি গু বাবারও নাম শুনেছি যিনি গায়ে গু মেখে বসে থাকেন। কিন্তু হাগা বাবার নাম এই প্রথম শুনলাম। কৌতুহল হতেই চলে গেলাম।

নাম হাগা বাবা হলো কেনো সেটা এক মুরিদের কাছে জিজ্ঞেস করতেই মুরিদ কানের কাছে ফিসফিসিয়ে বললো,হাগা বাবা গায়ে কোনো গু-টু মাখেন না। তাহলে তো গু বাবা ই নাম হতো। উনি কোনো খাদ্য গ্রহণ না করে শুধুই হাগেন অর্থাৎ সারাক্ষণ পয়োনিষ্কাশনের উপরেই থাকেন।

হাগাবাবা নাম হলেও দরবারে কোনো মলমূত্রের চিহ্নও নেই। একদম পরিষ্কার। কারণ বাবা প্রায় সারাদিন টয়লেটেই থাকেন আর সেখানেই প্রক্ষালন সারেন। একান্ত অনুরাগী ভক্তরা সেখান থেকেই প্রয়োজনানুসারে নিয়ে যায়। বাবা শুধু মিনিট দশেকের জন্য দরবারে এসে ভক্তদের সাথে কথা বলেন।

মুরিদ আরো জানালো,বাবা সর্বরোগের চিকিৎসা করলেও ডায়রিয়া,আমাশয়,কষা এমনকি পাইলসেরও চিকিৎসা করার জন্য বিখ্যাত। ফুঁ দিলেই পাইলস সেরে যায়। অপারেশন লাগে না।

আমি বাবার কাছে গিয়ে বললাম,
- আপনি সারাক্ষণ হাগেন এটা কোনো অলৌকিক ক্ষমতা না। আপনার মলদ্বারে স্ফিংক্টার জনিত কোনো সমস্যা আছে নয়তো আপনার পরিপাক ক্রিয়া অতি বেশি সক্রিয়।

হাগা বাবা গম্ভীর গলায় উত্তর দিলেন,
- আপনে শহর থেকে আইছেন। তাই বিশ্বাস হইতাছেনা। যাউকগা,আপনারে বিশ্বাস করাইতে আমার ঠ্যাকা পড়েনাই।

আমি দেখলাম,ঘটনা অন্যদিকে মোড় নিচ্ছে। বাবা রেগে গেলে আর কথা বেড়োবেনা। সুরটা তাই একটু নরম করে বললাম,
- আপনার যে অলৌকিক ক্ষমতা আছে,সেটা কিভাবে টের পেলেন?

- সে এক বিরাট হিস্টোরি। একদিন মাগড়াপাড়া থেইক্যা গাড়ি কইরা বরযাত্রী যাইতাছিলাম বইদ্যারবাজারে। মাঝখানে ঘন জঙ্গল। ডাকাতগো আখড়া। ডাকাতরাও তাড়া করলো। হঠাৎ জঙ্গলের মইধ্যেই গাড়ির তেল শেষ হয়া গেলো। তেল ছাড়া তো জানে খতরনাক অবস্থা। আমি নাদান বাচ্চা,ভয়ের চোটে পিশাব বাইর হয়া গেলো। হইলো তো হইলোই,এক্কেবারে তেলের ট্যাংকিতে। গাড়ি স্টার্ট হয়া গেলো।

আমি বললাম,
- ডিজেল ইন্জিন তো পানিতেও কিছুদূর আগায়।

হাগাবাবা বললেন,
- আরে ঘটনা তো এইখানেই শেষ না। সেইদিন রাইতেই স্বপ্নে এক ওলী আইসা কইলো,তুই আইজ কত মানুষের জান বাঁচাইছোত। তরে আমি বর দিলাম। তুই আজ থেইক্যা শুধুই হাগবি। সেই হাগা মানুষ মাথায় কইরা রাখবো।

বাবা এক ঘন নিঃশ্বাস ফেলে বললেন,এই হইলো হিস্টোরি। বুঝছেন?

এ ঘটনা শুনে আমি মনে মনে নিজেকে গালাগালি দিচ্ছি। ঢাকায় ফিরে হারামজাদা আব্বাসরে পিটাইতে হবে। ও না বললে জীবনেও এমন ভন্ড লোকের কাছে আসি আমি?

হাগাবাবা আমার দিকে তাকিয়ে বললেন,
- বাপজান,আপনারে কয়েকটা জ্ঞানের কথা বলি। মানুষের জীবনের দুই অবস্থা। খাওয়া আর হাগা। এই দুইটার একটা মিস গেলোতো মানুষ শেষ। হাগারে তুচ্ছতাচ্ছিল্য কইরেন না। আমার পরদাদায় কইতো,হাগাতে স্বর্গীয় সুখ। পেটে চাপ পড়লে বুঝা যায় জাহান্নাম কই।

এক মুরিদ পাশ থেকে চিৎকার করে বলে উঠলো,মারহাবা বাবা..!! বড়ই জ্ঞানের কথা।

বাবা বলতে লাগলেন,
- দ্যাখেন বাপ,দুনিয়াতে হাগামুতা কইরাই তো কত দেশের জন্ম হইলো। আপনারা তো অলৌকিক ইতিহাস জানেন না। উরুগুয়ে মানে উরুতে গু; প্যারাগুয়ে মানে গুয়ে প্যারা; তেলেগু মানে তেলের মধ্যে গু। আবার অংকের বইয়েই কি সব লসাগু কষাগু আছে..!! দুনিয়ার এক বিরাট অংশ আমরা এইভাবেই তো ভইরা ফালাইছি।

এতক্ষণ মেজাজ যাও শান্ত ছিলো,এইবার তা সপ্তমে উঠে গেলো। আমি লাফ দিয়ে দাঁড়িয়ে বললাম,আচ্ছা ফালতু লোকতো আপনি। আন্দাজে ফান্দাজে যা মনে আসতেছে তাই ই বলতেছেন। ভন্ডের বাচ্চা,পাছায় পুলিশের বাড়ি পড়লে হাগামুতা সব বের হয়ে যাবে।

আর এখানে থাকা যায় না। গাড়িতে উঠে পড়লাম। স্টার্ট দেওয়ার পর অগ্নিঝরা দৃষ্টিতে ভন্ডের দিকে তাকালাম। দেখলাম ব্যাটা হাসছে আর আমার দিকে দাঁত কেলানো হাসি দিয়ে বললো,
- বাপজান,আমার ক্ষেমতা টা বিশ্বাস করলেন না। চিন্তা নাই,শীঘ্রই বিশ্বাস হবে। দুনিয়াটাই ঘুরে হাগার উপর।

আব্বাস ছিলো আমার বাড়ির দাড়োয়ান। ফাযলামি আমি একদমই পছন্দ করি না। সেদিনই হারামজাদাকে ঘাড় ধরে বিদায় করে দিয়েছিলাম। রহস্যময় কিছুর ঠিকানা দিবি তো ভালোমত কিছু দে। আলতু-ফালতু জিনিসে কেনো..!!

সেদিনের পর মাসখানেক কেটে গিয়েছে। ইদানিং একটা সমস্যায় পড়েছি। নাকে শুধু টয়লেটের গন্ধ আসে। সে যতই পারফিউম কিংবা এয়ার ফ্রেশনার ব্যবহার করি।

সেদিন পার্টিতে যাবো,ইয়াসমিন রেডি হয়ে আমার সামনে এসে দাঁড়ালো। জিজ্ঞেস করলো ওকে কেমন লাগছে। ওর
দিকে তাকাতেই মাথাটা চক্কর দিয়ে উঠলো। আমি তৎক্ষণাৎ নাকে হাত চাপা দিলাম।

ওর শরীর থেকে তীব্র বিশ্রী একটা গন্ধ বের হচ্ছে। ঠিক যেনো...


No comments:

Post a Comment